HUMAN PEACE
  • Home
  • Life & Philosophy
  • Islamic posting on my Facebook account
  • Dialogue with a Priest
    • Dialogue with a priest-Part-3
    • Dialogue with a priest-part-4
    • Free download
  • Comparative Theology
    • Islam >
      • EID UL ADHA – THE FEAST OF EVERGREEN SACRIFICE!
      • EVILS OF FALSE WITNESSING
      • HOW MUCH DO WE ENJOY?
      • THE SCAR OF REVERING PIETY
      • UNCERTAIN THESE MOMENTS!
      • EID – THE DAY OF GREATNESS
      • DEBT IS AN OBLIGATION!
      • টেলিভিশন বিজ্ঞাপনগুলো কী শিক্ষা দিচ্ছে?
    • Christianity >
      • Christian beliefs
    • Hinduism >
      • Hindu Beliefs
      • Nine Beliefs of Hinduism
      • Hindu Scripture
      • Christian Response to Hinduism
    • Buddhism
  • HEALTH
    • Diseases Caused by Smoking
    • Effects of Smoking during Pregnancy
    • Harmful Health Effects Of Smoking
    • Side Effects of Smoking Cigars
    • Effects of Smoking on the Skin
    • Short & Long-Term Effects of Smoking
  • Story
    • অণুগল্পঃ জীবন যেখানে যেমন
  • Bangla Poem
    • মূল পাতা
    • খ্যাতিমান কবিদের কবিতা
    • নির্বাচিত কবিতা
  • welsh-studios

অণুগল্পঃ জীবন যেখানে যেমন 

বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকা শহরের বহুতল ভবনগুলো যেনো এই বৃষ্টিকে উপহাস করে। বড় বড় হাসপাতালগুলোর ভিতর থেকে তা আরো অনুভব করা যায় না। কেবিনে রোগী দেখতে এসে জানালা দিয়ে শুধু বৃষ্টির অঝোর ধারাই দেখা যাচ্ছে, শব্দগুলো অণুরনিত আর হচ্ছে না। কিন্তু এই অঝোর ধারা দেখেই দিপু কেমন উতলা হয়ে উঠলো। পালস দেখার জন্য রোগীর হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে, পালস বিট দূরে কোথাও হারিয়ে গেছে, সেখানে জায়গা দখল করেছে টাপুর টুপুর শব্দ।

“তুমি একটু অন্যরকম, অন্য সব ডাক্তারদের থেকে”, রোগীর কথায় সচকিত হয়ে উঠে দিপু। রোগীর দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসে। “আপনিও একটু অন্যরকম, অন্য সব রোগীদের থেকে”, প্রত্যুত্তর দেয় দিপু। রোগীর নাম ভাস্কর, প্রথম দেখাতে বয়স খুব বেশি মনে হয় না। তার সাথে কথা বললে আরো কম মনে হবে। দিপু যখন ভাস্করের ব্রেনের সিটি স্ক্যান দেখে, মনে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছিলো। ভেবেছিলো এতো তাড়াতাড়ি এই লোক এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে! যখন জানলো বয়স পঞ্চাশ ছাড়িয়ে গেছে অনেক আগেই, যেনো কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। কথাটা ওর প্রফেসরকে বলা মাত্রই পোড় খাওয়া অভিজ্ঞ প্রফেসর হেসে বলে উঠেন, “ডাক্তার হচ্ছো তাহলে এখন! পঞ্চাশের উপরে কেউ মারা গেলে আর কষ্ট লাগে না, তাই না?”চমকে উঠে দিপু, পরে অনেক ভেবেছে এই ব্যাপারটি নিয়ে। মেনেও নিয়েছে সে। অবচেতনভাবেই সে খেয়াল করেছে, অল্প বয়স্ক রোগীদের বেলায় যতটা শ্রম দেয়, বয়স্কদের বেলায় ততটা নয়। যেনো ধরেই নিয়েছে তাদের দিন শেষ।

ভাস্করেরও দিন খুব বেশি নেই। অপারেশনের আগেই তাকে বলা হয়েছিলো কাগজ কলমের সমস্ত কাজ সেরে ফেলতে। এতো বড়ো টিউমার অপারেশন করেও খুব বেশি বের করা যাবে না, এরপর আছে কেমো আর রেডিওথেরাপির ধাক্কা, এ যেনো বিধাতার কাছ থেকে কিছু সময় কেনা। অন্যান্য রোগীরা এই সময় খুব ভেঙ্গে পড়ে, কিন্তু ভাস্করের স্বভাব তা নয়। জীবনের অধিকাংশ সময় জীবনটাকে খেলা হিসেবে নেওয়া ভাস্করের কাছে এটাও যেনো একটা খেলা। হয় হারবে, নয়তো জিতবে।

অপারেশনের দুই দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে এই দুই দিনেই তার সাথে দিপুর খুব সম্পর্ক হলো। দিপুও যেমন কথা বলতে ভালোবাসে, ভাস্করও তেমন কথা শুনতে ভালোবাসে। কখনো কখনো দুই জনের কথক আর শ্রোতার ভূমিকাও বদলে যায়। দিপুর নাইট ডিউটির অধিকাংশ সময় কেটে যায় এই রুমটিতেই।
অসম বয়সের এই আলোচনায় অনেক কিছুই আসে। রাজনীতি, ধর্মনীতি থেকে শুরু করে প্রেমও পর্যন্ত। এভাবেই ভাস্কর জেনে যায় সন্ধ্যার কথা। সন্ধ্যার সাথে দিপুর পরিচয় মেডিকেলে পড়তে এসে। একই সাথে মেডিকেলে প্রবেশ ওদের। এক সাথে ক্লাস। এক সাথে আড্ডা। তারপর হঠাৎ একদিন ভালোবাসাকে পেরিয়ে একেবারে প্রেম। ঘোষনাটা আসে সন্ধ্যার কাছ থেকে, আর দিপু তখনো কাউকে ‘না’ বলতে শিখে নি।

ভাস্কর জানে, ওদের সম্পর্কটা থাকে নি, কেনো থাকে নি, দিপু তা বলে নি। ভাস্করও আর জানতে চায় নি, বুঝে নিয়েছে, এই বুড়োকে যে এতো কথা বলেছে সেটাই ঢেড় বেশি। আজ একটু পরে ভাস্করকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাবে। “কবিরা বলেন, তাদের মৃত্যু যেনো হয় চাঁদনী রাতে আর আমি দেখছি বিধাতা ডাকছেন আমায় এই বৃষ্টির দিনে,” ভাস্করের কথা শুনে সহজভাবে দিপু বলে, “আপনি কি তৈরী হয়েই আছেন? সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমরা শত চেষ্টা করলেও ফিরে আসবেন না?”

“কিছু দিনের জন্য? মন্দ লাগবে না! এই শেষ মুহূর্তে জীবনটাকে খুব প্রিয় মনে হচ্ছে। জানো, যারা হঠাৎ করে মারা যায়, তাদের মৃত্যুর কোনো চিন্তা নেই। আর যারা জানে, সময় বেশিদিন নেই, তারা হয় খুব বেশি করে বিধাতার দিকে ঝুঁকে পড়ে, নতুবা আমার মতো জীবনটাকে উপভোগ করতে চায়, বিন্দু পরিমাণও ছাড় দিতে চায় না”। 

“আর যারা প্রতিনিয়ত মৃত্যুকে দেখে?” দিপুর কথা শুনে হা হা করে হেসে উঠে ভাস্কর,“ডাক্তার, শুধু তোমরাই প্রতিনিয়ত মৃত্যুকে দেখো না, আরো অনেকেই দেখে। তুমি বরং তাদের কথা চিন্তা করো, যারা প্রতিনিয়ত মৃত্যুকে কাটাছেড়া করে”। 

আবারো হেসে উঠলো ভাস্কর, “তুমি আর মেডিকেল থেকে বের হতে পারলে না! তা হোক, তোমাকে বলি, যদি আজ আমি না ফিরে আসি, একটু হলেও আমার জন্য কষ্ট পেয়ো। কোনো জীবনই এতো সহজে চলে যাবার নয়, যতই সে বুড়ো হোক!”

ইমার্জেন্সীতে একটি বাচ্চা ছেলে এসেছে, রোড এক্সিডেন্টের। জ্ঞান নেই, অবস্থাও খুব ভালো নয়, মাথায় বিশাল আঘাতের চিহ্ন আছে। দিপু বাচ্চাটিকে নিয়ে খুব ব্যস্ত। ভীষনভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে বাঁচানোর জন্য। দীর্ঘ দুই ঘন্টা যুদ্ধ করে হেরে গেলো সে। হেরে গেলো ভাস্করও। হাসপাতালটা হঠাৎ করেই অসহ্য লাগছে দিপুর কাছে। বাইরে বেরিয়ে এলো।

বৃষ্টি থেমে গেছে অনেক আগেই। গুমোট ভাবটাও নেই, বরঞ্চ কী এক অনাবিল হাওয়া! বাইরে বেরিয়ে দিপুর খারাপ লাগছে না, চিন্তা থেকে বাচ্চা ছেলেটা, এমনকি ভাস্করও নেই। আকাশে ভেসে উঠা রংধনুর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কী যে হলো দিপুর! শূন্য অনুভূতি! যেনো তা দিগন্তে মিলিয়ে যাবার অপেক্ষায়।

আনমনে হেসে উঠলো দিপু, একটু পরেই হাসপাতালের দিকে পা বাড়ালো।

Powered by Create your own unique website with customizable templates.